শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ০৪:১০ অপরাহ্ন

আমতলীর হাসপাতালে খাবার স্যালাইন থাকা সত্ত্বে রোগীরা পাচ্ছেনা

আমতলীর হাসপাতালে খাবার স্যালাইন থাকা সত্ত্বে রোগীরা পাচ্ছেনা

রিপোর্ট আজকের বরিশাল:
আমতলী ও তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত স্যালাইন থাকা সত্ত্বেও রোগিরা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগে ওয়ার্ড ইনচার্জের তর্ক। প্রচন্ড তাপদাহে আমতলী-তালতলী উপজেলায় পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের উপচে পড়া ভীর। হাসপাতালের আসন সীমিত থাকায় রোগীদের বাড়ান্দায় মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কলেরা ও খাবার স্যালাইন পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও রোগীরা পাচ্ছে না- এমন অভিযোগ রোগীর স্বজনদের। বাহির থেকে স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে বলে জানান তারা। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রচন্ড তাপদাহে আমতলী ও তালতলী উপজেলায় পানি বাহিত ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ¦র ও কাশি রোগের প্রাদূর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকাদের সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে ৫০ জন ডায়েরিয়া ও ১০ জন নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে কলেরা ও খাবার স্যালাইন পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও রোগীরা পাচ্ছে না এমন অভিযোগ রোগীর স্বজনদের। তাদের বাহির থেকে স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতালে আসন সঙ্কট থাকায় রোগীদের বাড়ান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে থাকতে হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকারা রোগীদের সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন। রোগী স্বজনদের অভিযোগ হাসপাতাল থেকে কোন স্যালাইন দিচ্ছে না। হাসপাতালের ওয়ার্ডে গেলেই সেবিকারা একটি সাদা কাগজের সিলিপ ধরিয়ে দেয়। ওই সিলিপ অনুসারে বাহির থেকে ওষুধ কিনে আনতে হয়। এ নিয়ে শনিবার দুপুরে হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ সেবিকা শিখা রানী রোগীর স্বজন নয়া মিয়ার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। শনিবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে দেখা গেছে, তিনটি ওয়ার্ডের সকল আসন পরিপূর্ণ। রোগীরা হাসপাতালের বাড়ান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সকল ওয়ার্ডে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ¦র ও সর্দি-কাশির রোগীতে পরিপূর্ণ। ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রিয়া শিকদার, বেল্লাল হোসেন, বসির হাওলাদার, তারা ভানু, বাবুল সওদাগর, আনোয়ারা বেগম,জীবন ও আল আমিন জানান, হাসপাতাল থেকে কোন স্যালাইন দিচ্ছে না। সকল প্রকার স্যালাইন বাহির থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। রোগীর স্বজন আবুল মিয়া জানান, গত দু’দিন ধরে হাসাপাতালে রোগী নিয়ে অবস্থান করছি। হাসপাতাল থেকে কোন স্যালাইন দিচ্ছে না। খাবার স্যালাইনের জন্য সেবিকাদের কাছে কয়েক বার গিয়েছি কিন্তু তারা স্যালাইন নেই বলে আমাকে তাড়িয়ে দেয়। তিনি আরো বলেন, আমি স্যালাইন আনতে গেলে আমাকে বাহির থেকে স্যালাইন কিনে আনতে বলেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমার সাথে শিখা রানী খারাপ আচরণ করেছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু তানভিরের মা সানজিদা ও শিশু ইদ্রিসের মা সুমি আক্তার বলেন, হাসপাতাল থেকে কোন এন্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া হচ্ছে না। সকল প্রকার ওষুধ বাহির থেকে কিনে আনতে হয়। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড ইনচার্জ সেবিকা শিখা রানী বলেন, হাসপাতালে কোন স্যালাইনে সঙ্কট নেই। পর্যাপ্ত স্যালাইন রয়েছে। রোগীদের চাহিদা অনুসারে স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন থাকা সত্ত্বেও রোগীরা স্যালাইন পাচ্ছে না এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, যত দিবেন ততই রোগীদের প্রয়োজন হবে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শংকর প্রসাদ অধিকারী হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রচন্ড তাপদাহের কারণে পানি বাহিত রোগের প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত স্যালাইন থাকা সত্ত্বেও রোগীরা স্যালাইল পাচ্ছে না এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, রোগীরা স্যালাইন কেন পাচ্ছে না খোঁজ নিয়ে এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2012
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD