রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৪৭ অপরাহ্ন
রিপোর্ট আজকের বরিশাল:
পিরোজপুরের নাজিরপুরে হিন্দুদের জমিতে ধান কাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সংঘর্ষে ৭ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ২ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের ২৪ নং চর বানিয়ারী গ্রামে। ওই গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার আলী মোল্লা জানান, ওই গ্রামের হিন্দুদের জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। কিন্তু ২৭ এপ্রিল শনিবার সকাল সোয়া ৯ টার দিকে স্থানীয় কতিপয় সন্ত্রাসী সহ প্রায় ২ শতাধীক লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্থানীয় বিধান বিশ্বাসের জমির ধান কেটে নিতে শুরু করলে স্থানীয়রা তাতে বাধা দেয়। এ সময় চিতলমারী থানা পুলিশ ও প্রতিপক্ষ তাদের মারপিট করে আহত করে। এ হামলায় স্থানীয় হরশিত বিশ্বাসের পুত্র সমর বিশ্বাস (৩০), বিশ্বদেব বিশ্বাসের পুত্র বিধান বিশ্বাস (৩০), তার ভাই বিদ্যুৎ বিশ্বাস (২৮), জাফর খানের পুত্র জামাল খান (১৮), নুপুর বিশ্বাস (২০), এমাদুল শিকদার (২৮) ও জয়ন্তি বিশ্বাস (৩০) আহত হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. মিজানুর রহমান ও থানা পুলিশের সহায়তায় আহতদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের হামলায় আহত জয়ন্তি বিশ্বাস (৩০) নামের এক যুবতী জানান, স্থানীয় হিন্দু-মুসলমান সবাই মিলে ওই জমির ধান কাটতে বাধা দিলে চিতলমারী থানা পুলিশ নাজিরপুর থানা এলাকায় ঢুকে হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে আমাদের উপর উপর্যুপরি হামলা চালায়। ওই থানার পুলিশ সদস্য রফিক হোসেন তার হাতে থাকা রাইফেলের বার্ড দিয়ে স্থানীয় বিধান বিশ্বাসের মাথায় আঘাত করায় সে গুরুতর আহত হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ সদস্য প্রভাষ আমাকে সহ কয়েকজনকে অকারনে মারধর করে আহত করেছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চিতলমারী থানা পুলিশের ওসি অনুকুল সরকার জানান, তারা শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সেখানে গিয়েছেন। অন্য থানা এলাকায় গিয়ে একটি পক্ষের হয়ে হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে এরিয়ে যান। আজ সকাল সোয়া ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে বাগেরহাট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাৎ হোসেন, পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহম্মেদ মাইনুল সহ চিতলমারী থানা ও নাজিরপুর থানা পুলিশের ওসি সহ প্রায় অর্ধ শতাধীক পুলিশ সেখানে অবস্থান করছেন। স্থানীয় রসময় বিশ্বাস জানান, পুলিশের তালিকায় পলাতক স্থানীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী নজরুল সর্দার , শওকত মোল্লা ও লেয়াকত মোল্লার নেতৃত্বে প্রায় ২ শতাধীক লোক দাও, বল্লম সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আজ সকালে ওই জমির ধান কাটতে থাকে। তাতে বাধা দিলে চিতলমারী থানা পুলিশ সন্ত্রাসীদের সহয়তা করে ও আমাদের উপর হামলা করে। এ ব্যাপারে নাজিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুনির হোসেন জানান, বাগেরহাট ও পিরোজপুর ২ জেলা ও উপজেলার পুলিশ সহ স্থানীয় প্রশাসন এখানে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. মিজানুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্যারের ফোনে আমি সেখানে গিয়ে আহতদের দেখে আগে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরন করি। তবে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।