বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন

বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সুখবর

বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সুখবর

এবারের বাজেটে শিক্ষক সম্প্রদায়ের জন্য নানামুখী সুখবর রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির আন্দোলন করে আসছেন; এবার তার অবসান হতে চলেছে। অন্তত তিন হাজার বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক এবার এমপিওভুক্ত হচ্ছেন। এছাড়া নীতিমালায় না থাকলেও ৪৩১২টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার সাড়ে ২১ হাজার শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছেন। শুধু এমপিওভুক্তি নয়, বেসরকারি শিক্ষকদের বৈশাখী ভাতা এবং ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এর আগে তারা এ দুই সুবিধা পেতেন বিশেষ বরাদ্দের আওতায়। বেসরকারি শিক্ষক, বিশেষত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির যে ঘোষণা এসেছে বাজেটে, তা নিঃসন্দেহে এক বড় স্বস্তিদায়ক ব্যাপার। ১৯৮৪ সালে সরকারি এক সিদ্ধান্তের পর দেশে প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে বেসরকারি বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা শুরু হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হয়। কিন্তু একই সময়ে অভিন্ন আইনের বলে প্রতিষ্ঠা সত্ত্বেও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো উপেক্ষিত থাকে। তারা মাত্র ৫০০ টাকা করে মাসোহারা পেয়ে আসছিলেন। অবশ্য ২০১০ সালের পর থেকে এই মাসোহারার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বেড়ে বর্তমানে সহকারী শিক্ষকদের ২৩০০ এবং প্রধান শিক্ষকের জন্য ২৫০০ টাকায় উন্নীত হয়। বলা বাহুল্য, এই সামান্য টাকায় একজন শিক্ষকের পরিবারের যা প্রয়োজন, তার অতি অল্পই মেটানো সম্ভব। বলা চলে, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা এতদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে, এটা এক বড় সুখবর। শুধু ইবতেদায়ি মাদ্রাসা নয়, ৩ হাজার বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিও ঘটতে যাচ্ছে একই সঙ্গে। বলা যায়, এ বিপুলসংখ্যক নাগরিকের জীবনমানের অনেক উন্নতি ঘটতে যাচ্ছে সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে। বলা নিষ্প্রয়োজন, শিক্ষকরা কতটা মনোযোগ ও নিষ্ঠার সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করবেন, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে তাদের আর্থিক সঙ্গতির ওপর। ক্ষুধা পেটে দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়ে। সঙ্গত কারণেই নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা তাদের দাবি পূরণের জন্য আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেই আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে তারা আশ্বাসও পেয়েছিলেন; কিন্তু এতদিন সেই আশ্বাস পূরণ হয়নি। এবার তাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে। উপর্যুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া শেষ হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা তাদের কর্মক্ষমতা ও দক্ষতার শতভাগ উজাড় করে দেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা সরকারের বর্তমান সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2012
Design By MrHostBD