বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৩৯ অপরাহ্ন
রিপোর্ট আজকের বরিশাল :
বানারীপাড়ায় দারিদ্রতার কাছে হার মেনে নিজ শিশু পুত্র সন্তান বিক্রি করেছেন স্বামী পরিত্যক্তা এক হতদরিদ্র মা। এমন চা ল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩ জুন। জানা গেছে বানারীপাড়া পৌর শহরের ১ নং ওয়ার্ডের স্বামী পরিত্যক্তা হত-দরিদ্র পারভিন বেগম অর্থাভাবে তার পাঁচ মাস বয়সী নবজাতক পুত্র সন্তানের ভরন-পোষন করতে না পেরে সন্তানটি বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন মানুষের দারস্থ হয়। সন্তান বিক্রির এমন সংবাদে ওই একই এলাকার বাসিন্দা কাছেম মোল্লার ছেলে ও বানারীপাড়া থানার তালিকা ভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সোহেলের বড় ভাই সুচতুর আনোয়ার মোল্লা ও তার অপর সহযোগী উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের আহমদাবাদ বেতাল গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে গাছ ব্যবসায়ী মোঃ সালেক দরিদ্র পারভিনকে অর্থের লোভ দেখিয়ে ওই শিশুটি আহমাদাবাদ বেতাল ক্লাব সংলগ্ন ফরাজি বাড়ির প্রবাসী গাফ্ফার ফরাজীর স্ত্রী নিঃসন্তান নাছরিন আক্তারের কাছে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। জানা গেছে বিক্রির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সুচতুর আনোয়ার ,সালেক ও নাছরিন আক্তার বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নোটারী পাবলিক আদালতের একটি কাগজে পারভিনের স্বাক্ষর নেন। পরে সন্তানের বিনিময়ে পারভিনকে আনোয়ার ও সালেক ৪০ হাজার টাকা দেয় বলে জানায় সে। এ বিষয়ে জানতে প্রবাসীর স্ত্রী নাছরিন আক্তারের বাড়িতে গেলে তিনি জানান মানব (মানুষ) কখনো বিক্রি হয় না,তিনি ওই শিশুটির ভরন-পোষনের দায়িত্ব নিয়েছেন এবং শিশুটির মা পারভিন আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল হওয়ার কারনে তাকে কিছু অর্থ দেওয়া হয়েছে। কত টাকা দেয়া হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নাছরিন আক্তার বলেন,আনোয়ার ও সালেকের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকা পারভিনকে দেয়া হয়েছে,এ ছাড়াও বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে তার প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে পারভিন কত টাকা পেয়েছে তা তিনি জানেন না। এ বিষয়ে আনোয়ার জানান ৪০ হাজার টাকা পারভিনকে দেয়া হয়েছে বাকি ৩০ হাজার টাকার বিষয়ে তিনি অবগত নন,এ বিষয়ে গাছ ব্যবসায়ী সালেক ভালো বলতে পারবেন। সালেক জানান, পারভিনকে দেয়ার জন্য তিনি নাছরিন বেগমের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে আনোয়ারের কাছে দিয়েছেন তবে আনোয়ার পারভিনকে কত টাকা দিয়েছে তিনি তা জানেন না। অভিযোগ উঠেছে মধ্যস্ততাকারী দুই দালাল হাতিয়ে নিয়েছে বাকী ৩০ হাজার টাকা। প্রসঙ্গত পারভীন অন্তসত্ত্বা হওয়ার তিন মাস পওে তার স্বামী দিনমজুর নরুজ্জামান তাকে ফেলে রেখে অজানার পথে পাড়ি জমায়। ফলে নিরুপায় হয়ে সে ভিক্ষাবৃত্তিকে পথ বেছে নেয়। ৫ মাস পূর্বে তার কোল জুড়ে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান জন্ম নিলেও তার ভরণপোষণে হিমশিম খেতে থাকে পারভীন।আদর করে পুত্রের নাম রাখে সে সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) পিতার নামের সঙ্গে মিল রেখে আব্দুল্লাহ। কিন্তু দারিদ্রতার কাছে হার মেনে এক পর্যায়ে প্রিয় সন্তান বিক্রি করতে সে বাধ্য হয়। এদিকে অর্থাভাবে এবং দালালদের প্ররোচনায় পারভিন বেগম তার নারী ছেড়া ধন পুত্রকে বিক্রি করলেও এখন তাকে ফিরে পেতে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। অপরদিকে অর্থাভাবে এক দুঃখীনি মায়ের নবজাতক সন্তান বিক্রির ঘটনায় এলাকায় চা ল্যের সৃষ্টি হয়েছে।