মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন
রিপোর্ট মোঃ ইলিয়াছ চৌধুরী:
বর্ষায় মেঘনার ভয়ানক ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে ভোলার ৪টি উপজেলার বিস্তীর্ন জনপদ। এতে চরমভাবে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে তজুমদ্দিন, মনপুরা, চরফ্যাশন ও লালমোহন উপজেলার ২৬ কিলোমিটার বাঁধ। এসব বাঁধে বসতি ও গুরুপ্তপূর্ন স্থাপনা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোন মুহুর্তে বাঁধে ধ্বস নামতে পারে বলে আশংকা করছেন নদীর তীরবর্তি এলাকার মানুষ। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বরাদ্দের কারনে প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনের মুখে পড়ছে জনপদ। টেকশই বাঁধ মেরামত করে মেঘনার ভাঙ্গন বন্ধের দাবী উপকূলবর্তী মানুষের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে, তজুমদ্দিন উপজেলার চাচড়া ও সোনাপুর পয়েন্টে ৭ কিলোমিটার, লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৩ কিলোমিটার, চরফ্যাশন উপজেলার চর মোতাহার এলাকার ৪ কিলোমিটার ও মনপুরা উপজেলার মনপুরা ও সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১২ কিলোমিটার বাঁধ বর্তমানে ভয়ানক ঝুঁকিতে। বর্ষার মৌসুমে যে সময় এসব বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিভিশন-২) কাওছার আলম জানান, বর্তমানে মনপুরা, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও চরফ্যাশন উপজেলার ২২ কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ন। এখানে বাঁধ সংস্কারে প্রয়োজন ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা। আর যদি সিসি ব্লক দিয়ে নতুন করে বাঁধ নির্মান করা হয় তবে লাগবে ১৮০০ কোটি টাকা। কিন্তু ১২ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতে বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র দেড় কোটি টাকা। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুব অপ্রতুল। বেশী বরাদ্দ না দেয়ায় টেকশই বাঁধ নির্মান করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাঁধের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছরই মেঘনার ভাঙ্গনের মুখে বিস্তীর্ন জনপদ। এতে বসতভীটা হারা হয় পড়ে বহু পরিবার। ভীটাহারা নিঃস্ব মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বসতভীটা, ফসলি জমি ও পুকুর ঘের হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ছেন উপকূলের বাসিন্দারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক জরিপে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীতে ভাঙ্গে ১০০/১৫০ মিটার, বাঁধ ভাঙ্গে ১/২ কিলোমিটার এবং লম্বালম্বিভাবে বাধের ঢাল ভাঙ্গে ১৫/২০ কালোমিটার মিটার। বছরে গৃহহারা হয়ে পড়েন অন্তত ১৫০০ থেকে ২ হাজার পরিবারের মত। সে হিসাবে প্রতি বছর ১০ কিলোমিটারের মত বাঁধ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এবং বাস্তুহারা হয়ে ১০ হাজার পরিবার। যারা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে বসতি গড়ে তুলেন। জেলার নদী ভাঙ্গন রোধে টেকশই বাঁধ নির্মানের মাধ্যমে নদীর তীরবর্তি এলাকার বাসিন্দাদের বসতি এবং গুরুপ্তপূর্ন স্থাপনা রক্ষার দাবী ভায্গন কবরিত এলাকার মানুষের।