মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
রিপোর্ট আজকের বরিশাল :
৬৫দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরা শুরু করেছিলেন জেলেরা। শুরুতেই জেলেদের জালে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। ফলে গত ২৩ জুলাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর সাগরে মাছ শিকারে নেমে অল্পসময়ের মধ্যেই ফিশিং বোটগুলোতে মাছ বোঝাই করে ফিরে আসছে বরিশাল, পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় এলাকার মৎস অবতরণ কেন্দ্র ও বন্দরগুলোতে। যেকারণে জেলেদের জালে ধরা পরা ইলিশকে ঘিরেই দীর্ঘ ৬৫দিন ঝিমিয়ে থাকা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও বন্দরগুলো কর্মব্যন্ত হয়ে উঠেছিলো। তবে লঘুচাপের কারণে বর্তমানে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় জেলেদের মুখের হাসি অনেকটাই মলিন হতে বসেছে। ইলিশ শিকারে মৌসুমের শুরুতেই বিরূপ আবহাওয়া জেলেদের মধ্যে নতুন করে উদ্যোগের সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকায় অনেক ফিশিং বোটই ফিরে এসেছে তীরে। ফলে রবিবার থেকে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে মৎস্য অবতরণ ও বন্দরগুলো। বন্দরগুলোতে ফেরত আসা বোটগুলোতে যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে তাই সম্বল বাজারের। জেলেরা জানায়, সাগর উত্তাল হয়ে ওঠলে মাছ ধরা সম্ভব হয়না। বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উত্তাল থাকায় সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ বললেই চলে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও বৃষ্টি হলে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলেও তারা আশা করছেন। পটুয়াখালীর আলিপুর মৎস্য বন্দরে নোঙর করে রাখা এফবি ফয়সাল নামের বোটের মাঝি শাহ জালাল বলেন, আবহাওয়ার কারণে হঠাৎ সাগর উত্তাল হওয়ায় মাছ শিকার বন্ধ করে তারা তীরে ফিরে এসেছেন। যে মাছ নিয়ে এসেছেন তা খুবই সামান্য। জেলে মোবারক হোসেন বলেন, ৬৫দিনের নিষেধাজ্ঞায় পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে সময় কাটাতে হয়েছে। এখন মাছ শিকারে নেমেই আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আবার তাদের অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। মহিপুর মৎস্য বন্দরের শ্রমিক মনির হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে আলিপুর ও মহিপুর বন্দরে ইলিশের দেখা মিলতে শুরু করে। তবে বর্তমানে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় গত দুইদিনে ইলিশের আমদানি কমে গেছে। এতে কাজের চাপ কমে শ্রমিকদের রোজগারও কমে গেছে। আলিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফজলুল হক গাজী বলেন, সাগরে মাছ শিকারে নেমে দুইদিন যেতে না যেতেই সাগর উত্তাল হতে শুরু করে। ফলে শনি ও রবিবার স্থানীয় বেশিরভাগ ফিশিংবোট ফিরে এসেছে। এর প্রভাব শুধু ব্যবসায়ী নয়, জেলে-শ্রমিক ও বোট মালিকসহ সবার ওপরে পড়ছে। কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা বলেন, জেলেরা জানমালের হেফাজতের জন্যই তীরে ফিরে এসেছেন। এজন্য উপকূলীয় বাজারগুলোতে ইলিশের আমদানিতে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অপরদিকে রবিবার থেকে বরিশাল নগরীর পোর্টরোডস্থ একমাত্র বেসরকারী মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সমুদ্র থেকে কোনো ফিশিংবোট মাছ নিয়ে আসেনি। তবে এর আগে ২/৩ দিন বরিশালে সামুদ্রিক বোট থাকায় প্রচুর ইলিশ ছিলো বাজারে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় নদীর ইলিশ বাজার দখল করে রেখেছে। ফলে দুইদিন আগের চেয়ে সোমবারের বাজারে এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ইলিশের দর আকার অনুযায়ী মণপ্রতি বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মৎস্য ব্যবাসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পোর্ট রোডের বাজারে গোটলা সাইজের ইলিশের দর মণপ্রতি ২২ থেকে ২৩ হাজার, ভেলকা সাইজের দর ৩০ থেকে ৩২ হাজার, এলসি সাইজের (ছয় থেকে নয়শ’ গ্রাম ওজন) দর ৪২ থেকে ৪৪ হাজার, কেজি সাইজের ৫৫ হাজার টাকা, কেজির ওপরে ৬৫ হাজার টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের দর রয়েছে মণপ্রতি এক লাখ ১৫ হাজার টাকা।