সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০১:১৩ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ছোট শৌলা গ্রামের দরিদ্র আঃ মালেক মল্লিকের (৭২) পরিবারের ৫ সদস্যের মধ্যে ৩ জনই প্রতিবন্ধি। অর্থাভাবে চিকিৎসা না হওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে প্রতিবন্ধি এ পরিবারটি।
জানাগেছে, আঃ মালেক মল্লিকের ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। ২য় সন্তান দেলোয়ার হোসেন (৩২) (সারা দেহে টিউমার) শারীরিক প্রতিবন্ধি এবং ৩য় সন্তান মাহমুদা বেগম (২৮) ও মাহমুদার ছেলে বাদশা ফাহাদ (০৮) দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। দেলোয়ার হোসেন মাথায় লাইপোমা টিউমার (এই টিউমার চামড়ার নিচে থাকে মাংসের সাথে সংযোগ থাকে না) নিয়েই জন্ম গ্রহণ করেছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে টিউমারের আকারও বড় হতে থাকে। ১০ বছর বয়সে রবিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসকরা অপারেশন করার সময় ব্যাপক রক্তক্ষরণ হলে সম্পূর্ণ টিউমার তারা অপসারনে ব্যর্থ হয়। এর কিছু দিন পর দেলোয়ারের বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে। এবং মাথা, পিঠ ও বুকসহ সারা দেহে টিউমার ছড়িয়ে পরে। টিউমারগুলো বিশাল আকার ধারণ করে শরীর থেকে ঝুলে পড়ায় দেলোয়ার স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারছেনা। বর্তমানে দেলোয়ার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।মাহমুদা বেগম ৫ম শ্রেণীতে পড়ার সময় একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আছাড় খেয়ে চোখে আঘাত পায়। ধীরে ধীরে নিভে যায় দু’চোখের আলো। ৯ বছর আগে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার দরিদ্র আবুল কালামের সাথে বিয়ে হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মাহমুদার। বিয়ের প্রায় ২ বছর পর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কালামের। ৪ মাসের শিশু সন্তান বাদশা ফাহাদকে নিয়ে মাহমুদা ফিরে আসে বাবার সংসারে। দেড় বছর পূর্বে খেলার সময় মাথায় আঘাত পেয়ে চোখে সমস্যা দেখা দেয়।দেশের নামকরা বিভিন্ন চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা করেও কোন লাভ হয়নি বরং ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীন হয়ে আসে। মা-ছেলে দু’জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। ফাহাদ বর্তমানে ঢাকা যাত্রাবাড়ি মদিনাতুল উলুম দৃষ্টি প্রতিবন্ধি হাফিজী মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। আঃ মালেক মল্লিকের মেয়ে মাহমুদা ও নাতী বাদশা ফাহাদকে ২০১৮ সালে চিকিৎসার জন্য ভারতের কোলকাতা অদ্বিতীয়া বিড়লা শংকরা নেত্রালয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা চেন্নাইতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। চেন্নাইতে চিকিৎসার জন্য মোটা অংকের টাকার প্রয়োজন। এ পর্যন্ত চিকিৎসায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা ব্যায় করে সহায়সম্বল হারিয়ে ধার-দেনায় জর্জড়িত হয়ে পড়ে পরিবারটি। টাকার জন্য স্বজনরা হাটে-বাজারে, অফিস, স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদে গিয়ে সবার কাছে হাত পাতছে। উক্ত পরিবারটি তাদের চিকিৎসার জন্য সরকার, দেশের বিত্তবান ও দানশীলদের নিকট সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।আঃ মালেক মল্লিক জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট শৌলা গ্রামের মৃত মফেজ মল্লিকের ছেলে।