শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
২৫% উৎসবভাতা এর পরিবর্তে ১০০% উৎসবভাতার দাবিতে শিক্ষকরা নগরীর মথুরানাথ পাবলিক স্কুল এর ৫৭তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত। বরিশালে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন বরিশালের বিভাগীয় অপরাজিতা সম্মেলন অনুষ্ঠিত নগরীর আলেকান্দা কাজীপাড়া এলাকায় এক প্রবাসীর ক্রয় করা জমির গেট ভাংচুর করছে প্রতিপক্ষরা। বছরের প্রথমদিনে সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরন শান্তি প্রিয় যুবসমাজ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে , অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরন। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি বরিশাল এর ২য় ব্যাচের ক্যাডেটদের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী আমার কোন দল নেই -সালাউদ্দিন রিপন বরিশাল বিভাগে নূরানী ৩য় শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ
কোটি টাকা নিয়ে উধাও কাঁদছেন ৩৭ হজযাত্রী

কোটি টাকা নিয়ে উধাও কাঁদছেন ৩৭ হজযাত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট:
সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও দালালের খপ্পরে পড়ে হজে যাওয়া হলো না ৩৭ মুসল্লির। হজে পাঠানোর কথা বলে কথিত মোয়াল্লেমসহ একটি চক্র কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও। এ অবস্থায় কাঁদছেন ৩৭ মুসল্লি। দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে হজে যেতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। টাকা উদ্ধারসহ প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রোববার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। প্রতারণার শিকার মুসল্লিরা জানান, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন পবিত্র হজের শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে। হজের উদ্দেশ্যে হাজিরা এখন মক্কায় অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় হজের প্রস্তুতি নিয়ে স্থানীয় মোয়াল্লেমের মাধ্যমে হজ এজেন্সির নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেও হজে যেতে পারেননি পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকার ৩৭ জন হজযাত্রী। এদের কেউ জমি বিক্রি করে কেউ গরু বিক্রি করে হজের জন্য টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু কথিত মোয়াল্লেম ওয়াছেদ আলীসহ প্রতারক চক্র এসব হজযাত্রীর কোটি টাকা নিয়ে উধাও। তাই প্রাক-নিবন্ধন করলেও আর হজে যাওয়া হলো না তাদের। অনেকে মিলাদ-মাহফিল, দোয়ার অনুষ্ঠান করে হজে যাওয়ার জন্য স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন। এখন সমাজে তাদের মুখ দেখানো কঠিন হয়ে পড়েছে। হজে যেতে না পারায় এখন তারা কাঁদছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট ফকিরপাড়া এলাকার মোয়াল্লেম ওয়াছেদ আলী ও কুমিল্লার লাকসাম এলাকার আব্দুল জলিল এটিএম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড ও সানফ্লাওয়ার এয়ার লিংকার্সসহ বিভিন্ন হজ এজেন্সির নামে দুই লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। তাদের হজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। সেই মতো হজে যাওয়ার জন্য প্রাক-নিবন্ধনও করেন তারা। কথা ছিল শেষ দিকে তাদের হজে পাঠানো হবে। মোয়াল্লেম ওয়াছেদের কথা মতো তারা হজের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। কিন্তু শেষ দিকে এসে টালবাহানা করেন ওয়াছেদ। একপর্যায়ে ঘা ঢাকা দেয় ওয়াছেদসহ প্রতারক চক্রের সবাই। এতে হজের আগ মুহূর্তে দিশেহারা হয়ে পড়েন ৩৭ জন মুসল্লি। চাহিদামতো টাকা দিয়েও হজে যেতে না পারায় কষ্টের সীমা নেই তাদের। দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতার জন্য ঘুরছেন তারা। ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা উদ্ধারসহ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তারা। তেঁতুলিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা বশির আলম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা থেকে জমিয়ে হজে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছিলাম। মোয়াল্লেমসহ প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে হজে যাওয়া হলো না। আমাদের টাকা উদ্ধারসহ পরবর্তী বছরে যেন আমরা হজে যেতে পারি সে ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই। লিয়াকত আলী নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমরা ওয়াছেদের কথামতো হজে যাওয়ার সব প্রস্তুতি নিয়েছি। বাড়ির সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি। মিলাদ মাহফিল করেছি। হজের কাপড় কিনেছি। এ অবস্থায় আমরা আর যেতে পারলাম না। আমরা এই প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আর কোনো হজযাত্রীর সঙ্গে যেন এমনটা করতে না পারে তারা। পঞ্চগড় জেলা শহরের মিলগেট এলাকার ক্বারী কছিম উদ্দিন বলেন, শেষ মুহূর্তে এসে আমরা জানতে পারি প্রতারকের খপ্পরে পড়েছি। তারা গাঢাকা দেয়। আমাদের ভুয়া মেডিকেল করিয়েছে তারা। আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জমা দেয়নি। এমনকি আমাদের পাসপোর্টগুলোও তাদের হাতে আছে। আমরা আমাদের টাকা ও পাসপোর্ট উদ্ধারসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। পঞ্চগড় হাড়িভাসা এলাকার ইসমাইল হোসেন বলেন, ওয়াছেদ আমাদের চ্যালেঞ্জ করেছে না নিয়ে যেতে পারলে ডাবল টাকা ফেরত দেবে। বিশ্বাস করে তার হাতে টাকা দিয়েছি। তাকে নিয়েই হজের উপকরণ কিনেছি। শেষ মুহূর্তে এসে জানতে পারি তারা আমাদের নামে কোনো টাকা জমা করেনি। আল্লাহর ঘর জিয়ারত করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু যেতে পারলাম না। এদিকে মোয়াল্লেম ওয়াছেদ আলী ও আব্দুল জলিলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি আমি। তারা আমাকে জানিয়েছেন, প্রাক-নিবন্ধন হলেও মূল নিবন্ধন না হওয়ায় তাদের এবার হজে যাওয়ার সুযোগ নেই। ভুক্তভোগীদের আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2012
Design By MrHostBD