বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন

৬০ শিক্ষককে শোকজের সিদ্ধান্ত

এইচএসসি পরীক্ষায় খাতা মূল্যায়নের পর নম্বর গণনায় ভুল হওয়ায় সেই ৬০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শোকজের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। মূল্যায়নের পর কেন নম্বর যোগ করতে ভুল হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৫ দিন সময়সীমা বেধে দেয়া হচ্ছে বলে ঢাকা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের পর নম্বর যোগে ভুল করায় ঢাকা বোর্ডসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের ৬০শিক্ষককে শোকজের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) এ শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) জারি করা হবে।’তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষক মোট ২৫০টি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করে থাকেন। অনেক সময় অমনোযোগীর কারণে কেউ কেউ দু-একটি খাতার নম্বর যোগ করতে ভুল করেন। এ কারণে অনেক পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়ে যায়। এমন ভুলে প্রাপ্ত ফল না পাওয়ায় অনেক পরীক্ষার্থী ফেল করেন। পরীক্ষার্থীদের পুনঃনিরীক্ষণের আবেদনের ভিত্তিতে এসব শনাক্ত হয়ে ফলাফল পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। কেন এমন ভুল হলো তার ব্যাখ্যা দিতে বিভিন্ন বোর্ডের অধীনে অভিযুক্ত ৬০ শিক্ষককে শোকজ করা হচ্ছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব চাওয়া হবে।’এর আগেও এসএসসি পরীক্ষার ফলে এমন ভুল হওয়ায় একাধিক শিক্ষককে শোকজ করা হয় বলেও জানান ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান।গত ১৭ আগস্ট এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ হয়। এতে নতুন করে ৫৫৫ জন ফেল থেকে পাস করেন। নতুন করে জিপিএ-৫ পান ২৬৬ জন। প্রকাশিত পুনঃনিরীক্ষণের ফলে দেখা যায়, ঢাকা বোর্ডে নতুন করে ১৪৫ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পান। ফেল থেকে পাস করেন ২৮৯ জন। এক হাজার ৫৮৬ জনের আগের ফল পরিবর্তন হয়।ফল পুনঃনিরীক্ষণে রাজশাহী বোর্ডের ৬৬ পরীক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেন। নতুন জিপিএ-৫ পান ৪৪ জন। যশোর বোর্ডের ২৩ পরীক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেন। নতুন করে জিপিএ-৫ পান ১২ জন।কুমিল্লা বোর্ডের ৬২ জন ফেল থেকে পাস করেন। নতুন জিপিএ-৫ পান ১৬ জন। সিলেট বোর্ডের ১৬ পরীক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেন। ফল পুনঃনিরীক্ষণে নতুন জিপিএ-৫ পান ৬ জন।
দিনাজপুর বোর্ডের ২৯ জন ফেল থেকে পাস করেন। নতুন জিপিএ-৫ পান ৬ জন। ১৩৬ জনের ফল পরিবর্তন হয়।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে ৩৬৫ জনের ফল পরিবর্তন হয়। এর মধ্যে ফেল থেকে পাস করেন ৪৭ জন এবং নতুন করে জিপিএ-৫ পান ২৪ জন। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে আটজন ফেল থেকে পাস করেন। নতুন জিপিএ-৫ পান চারজন।এইচএসসির পাশাপাশি মাদরাসার আলিম পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের ফলও প্রকাশিত হয়। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নেয়া এ পরীক্ষায় ১৫ শিক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেন।
ফল পুনঃনিরীক্ষণে নতুন জিপিএ-৫ পান নয়জন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কামাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিতকরে বলেন, পুনঃনিরীক্ষণ শেষে গ্রেড পরিবর্তন হয় ৬৩ শিক্ষার্থীর।
প্রসঙ্গত, ১৭ জুলাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। পরদিন থেকে এক সপ্তাহ পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন নেয়া হয়। পুনঃনিরীক্ষণের মাধ্যমে শুধুমাত্র শিক্ষকদের মূল্যায়ন করা নম্বর যোগে ঠিক আছে কি-না. তা যাচাই-বাছাই করে এক মাস পর সেই ফল প্রকাশ করা হয়।এ বছর ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ শিক্ষার্থী এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে নয় লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন উত্তীর্ণ হন। পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2012
Design By MrHostBD