সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বরিশালে জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলা ও লুটপাট আহত অন্তত ৭ জন, থানায় অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ট্রাম্পের শুভেচ্ছাবার্তা কিসের ইঙ্গিত? ভারত কি তবে ব্যর্থ! কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি বলেই বেগম জিয়া ‘একজন আপোষহীন নেত্রী’ — আবু নাসের মো: রহমাতুল্লাহ মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ চায় না পরিবার সংস্কার ও বিচারবিহীন নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না : নাহিদ একাত্তরের অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করতেই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান- আসিফ মাহমুদ জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের দায়িত্বে সিমন্স
ভোলায় বৃদ্ধার শেকলে বন্দী জীবন

ভোলায় বৃদ্ধার শেকলে বন্দী জীবন

ভোলা প্রতিনিধি॥

দুই যুগ ধরে শেকলবন্দি ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মেদুয়া গ্রামের আব্দুল রশিদ ঢ়াড়ী। বাড়ির পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচে কৈশোর-যৌবন, আর অসংখ্য শীত-বর্ষা কাটিয়ে এখন জীবনের শেষবেলা তার। ছাড়া পেলেই সে হিংস্র হয়ে ওঠে, তাই মানসিক বিকারগ্রস্ত লোকটিকে শেকলে বেঁধে রেখে দায়িত্ব শেষ করেছেন সবাই। গত ২০টি বসন্তে এই শেকলটি তাই রশীদের সবচেয়ে বড় বন্ধু আবার সবচেয়ে বড় শত্রুও। মূলবাড়ির ভেতরে টানা-টানা লম্বা দুটি দোচালা ঘরে পার্টিশন দেয়া খোপ খোপ ঘরগুলোতে বাস করে দুই ভাইয়ের পরিবার। মাটি-লেপা পরিচ্ছন্ন বড় উঠানের পশ্চিমে গাছ-গাছড়ার ঝাড়-জঙ্গল। মাথার সিঁথির মতো মেঠো পথ ধরে এগিয়ে যেতেই পায়ে বাঁধা শেকল ধরে প্রাণপণ টানাটানি করতে দেখা গেলো মধ্যবয়স পেরুনো লোকটিকে। শেকলের আরেকটি প্রান্ত বাঁধা স্কুলের বিমের সঙ্গে। শিকল ছিড়ে মুক্ত হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা তার সফল হয়নি ২০ বছর ধরে। শেকলের বৃত্তের ভেতরই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয় তাকে, সেখানেই তার আহার-নিদ্রা। তার কাছাকাছি যায় না কেউ। মাঝেমধ্যে দূর থেকে লম্বা লাঠি দিয়ে ঠেলে দেয়া হয় ভাতের থালা। সরেজমিনে দেখতে গিয়েছিলেন এই প্রতিবেদক আকতারুল ইসলাম আকাশ। শোনা যাক তার মুখ থেকেই। সাহস করে কাছে গেলাম। হাত বাড়িয়ে দিতে হ্যান্ডশেক করেন শেকলবন্দী রশীদ। কেমন আছেন? জানতে চাওয়ায় বিড়বিড়িয়ে শুধু বললেন, আমি বাড়িতে যামু…!!! পরিবারের সদস্যরা জানান, তার বয়স যখন ৮ বছর। তখন তার মা এক আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা হন। তখন মায়ের পিছু পিছু ধান ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে রওনা হন রশিদ। তবে দুর্ভাগ্য কিছু পথ যাওয়ার পরেই পিছন থেকে এক বিষাক্ত সাপ কামড় দেয় তাকে। আর সেখান থেকেই তার সমস্ত দেহে প্রবেশ করে বিষ। আর সেই বিষেই বিষাদ হয় তার জীবন। মাঝেমধ্যে ভালো থাকলেও আজ প্রায় ২০ বছর ধরে ভালো হচ্ছেন না তিনি। সুযোগ পেলেই সামনে যা পান তা নিয়ে তাড়া করেন। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালায় লোকজন। তার হাতে আহত হয়েছেন অনেকে। যাদের মধ্যে পরিবারের দুই নারীও আছেন। তার হাত থেকে রক্ষা পায় না গরু ছাগলও। গরু ধরে লেজ কাটা, ছাগলের পা কাটা, ডানা ধরে হাঁস-মুরগী ছিঁড়ে ফেলা ছিলো তার প্রতিদিনের কাজ। তাই বাধ্য হয়েই বেঁধে রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হয় বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা।পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, জনপ্রতিনিধি-হাসপাতালসহ সবখানেই ধর্ণা দিয়েও প্রতিকার সমাধান পাননি। তবে পরিবার আশায় বেঁধেছে দিন। কেউ যদি অর্থ দিয়ে সাহায্য করত রশীদ ঢ়াড়ীকে। তাহলে হয়তো সুস্থ মস্তিষ্কে বেঁচে থাকত আব্দুল রশিদ।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2012
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD