বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৫২ অপরাহ্ন
বরিশাল:
করোনা ভাইরাসের সংক্রামন রোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে নিজ ঘরে অবস্থান করছেন দেশের মানুষ। বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন চলাচল। এতে কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর, শ্রমিক, রিক্সাচলকসহ দুস্থ ও অসহায় পরিবারের সদস্যরা। ফলে খাদ্যের সংকটও দেখা দিয়েছে তাদের। এ অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়থেকে দুস্থ ও অসহায় পরিবারের সদস্যদের খাদ্য সহায়তা করা হচ্ছে। আর মানবিক এই কাজে থেমে নেই বরিশালের সাংবাদিকরাও। তারা বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে যেমন সচেতন করার কাজটি করছেন, তেমনি দুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এরইমধ্যে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের উদ্যোগে গেলো ৫ দিন ধরে নগরের নদী বন্দর এলাকাসহ নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভাসমান পথ শিশুসহ দরিদ্র মানুষদের রাতের বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে খাবারে কখনো ভাতের সাথে ডিম-আলু, কখনো সবজি আবার কখনো খিচুরি-ডিম কিংবা খিচুরি মাংসের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। জাকির হোসেন জানান, সবাই অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে, শুকনো খাবার দিচ্ছে কিন্তু শিশু-নারীসহ কিছু ভাসমান মানুষ রয়েছে এই শহরে। তাদের ঘরবাড়ি কিছুই নেই, তাহলে রান্না হবে কিভাবে। এই চিন্তা থেকেই খাবার রান্না করে ভাসমান এ মানুষদের কাছে পৌছে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এ কাজে প্রথমে আমি ব্যক্তিগতভাবে নামি এবং সাথে আমার মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ব্যবহার করি। যাতে খাবার নিয়ে লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও শহরঘুরে বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতে কিংবা রাস্তারপাশে শুয়ে থাকা মানুষগুলোকে দিয়ে থাকি। এখন আরো কিছু স্থানীয় পত্রিকার প্রকাশক, জাতীয় দৈনিক, অনলাইন, টেলিভিশন ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর খাবার বিতরণের এ কাজে সহায়তাও করছেন সৈয়দ মেহেদী হাসান, রুবেল খান, রিপন হাওলাদার, অলিসহ বরিশালের তরুণ সাংবাদিক প্রজন্ম। ফলে এ ধারা প্রয়োজন অনুযায়ী অব্যাহত রাখা সম্ভব বলে জানান তিনি। এদিকে সাংবাদিকদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে নগরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে অসহায় ও দুস্থ পরিবার খুজে বের করছেন স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার প্রকাশক কাজী আফরোজা । পরবর্তীতে ওইসব পরিবারের কাছে পৌছে দেয়া হচ্ছে চাল-ডাল, তেল-লবনসহ খাদ্য পন্য। আর এ কাজটি বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী মজুমদারের তদারকীতে অনলাইন পত্রিকাটির বার্তা প্রধান মোঃ মাসুদ রানা, ফটোগ্রাফার এনআমিন রাসেলসহ সহযোদ্ধারা। এছাড়াও স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকদের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সড়কে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে একে দেয়া হচ্ছে গোলচিহ্ণ। পত্রিকার সম্পাদক সাইফুর রহমান মিরন যে কাজে নিজেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কবি ও সাংবাদিক সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, কোন বিপর্যয়ে বা জরুরী কোন মুহুর্তে দেশ ও দশের স্বার্থে সাংবাদিকরা কখনো ঘরে বসে থাকেনি। আজ যারা এ পেশায় থেকে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তারাই গুজবকে অন্ধকারে ফেলে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও অগ্রগামী কারার কাজটি করেন। এই যে বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে সরকার ও সাস্থ্য বিভাগের বার্তা এবং সঠিক সংবাদ সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছেন যারা, তারাই আবার সেই কাজের ফাঁকে অসহায় মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে। এটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।