শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন
করোনা ভাইরাস একটি জীবাণু, যা মানুষের শরীরে জ্বর, কাশি, কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া তৈরি করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এই রোগ নিজে নিজেই সেরে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি জটিলতা দেখা দেয় এবং এর জন্য হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে যারা বয়স্ক ও শারীরিকভাবে দুর্বল, তারাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয় এবং মারাত্বকভাবে তা প্রভাব দেখা দেয়। এই রোগ এর সংক্রমণ যেহেতু দ্রুত হয় তাই এর বিস্তার (Amplification) ও বেশি। খেয়াল রাখতে হবে, এই ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা নেই। তাই যদি আমরা এই রোগটিকে প্রতিরোধ করতে চাই, তাহলে আমাদের কিছু প্রতিরোধ ও প্রতিকারমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কিভাবে ছড়ায়:
এই ভাইরাসটি মূলত পশুপাখি এবং মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়।
আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, কফ ও থুথু’র মাধ্যমে
আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে আসলে, এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, কফ ও থুথু যদি আপনার পোশাকে বা কোথাও লেগে আছে, সেখানে স্পর্শ করলে, তা যদি আপনার নাকে, মুখে বা চোখে লেগে যায়, তাহলেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে।
লক্ষনসমূহ:
এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পরে সংক্রমণ লক্ষন দেখা দিতে ২-১৪ দিন সময় লাগে। প্রথম লক্ষন জ্বর এছাড়া শুকনো কাশি ও গলাব্যথা এর ফলে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং অর্গান বিপযর্য়ের মত ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে খুব কম ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্বক হয়।
যাদের ঝুঁকি বেশি:
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, ক্যান্সার এবং কিডনি সংক্রান্ত যে কোন রোগ এবং আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের।
প্রতিরোধ ব্যবস্থা : সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়।
ব্যক্তিগত সচেতনতা ( সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, ভীড় এড়িয়ে চলা)
হাচিঁ ও কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা
সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে মেলামেশা না করা
যেখানে সেখানে থুথু বা কফ না ফেলা
ঘনঘন নিয়মিত ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
হাঁচি বা কাশির পর
টয়লেট ব্যবহারের পর
অসুস্থদের যত্ন নেয়ার পর
খাবার প্রস্তুত করার আগে বা পরে
খাওয়ার আগে
হাত ময়লা হলে,
পশুপাখির সংস্পর্শে আসার পর অথবা পশুপাখির ময়লা পরিষ্কার করার পর।
লক্ষন দেখা দিলে কি করবেন:
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (IEDCR) এর হটলাইন ( ৩৩৩, ১৬২৬৩,১০৬৫৫) যোগাযোগ করুণ এবং আপনার অফিসে জানিয়ে রাখুন । আলদা কক্ষে অবস্থান করুণ ও মাস্ক পরিধান করুণ। অন্যান্য ব্যক্তি হতে কমপক্ষে ১ মিটার ( ৩ফুট) দুরত্ব বজায় রাখুন। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। বাহিরে যাওয়া থকে বিরত থাকুন, জরুরী প্রয়োজনে যেতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করুণ। ব্যবহার করা কাপড়চোপড় ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং আসবাবপত্র জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করুণ।
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে কি করবেন:
সংস্পর্শে আসার পর থেকে কমপক্ষে ১৪ দিন পর্যন্ত আলাদা কক্ষে অবস্থান করুণ।যাও হতে বিরত থাকুন। প্রয়োজনে বাহিরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করুণ। সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে কমপক্ষে ১ মিটার দুরত্ব বজায় রাখুন। এই ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষন দেখা দিলে IEDCR এর হটলাইন ( ৩৩৩, ১৬২৬৩, ১০৬৫৫) এ যোগাযোগ করুণ। ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষন দেখা না দিলে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরে যেতে পারবেন। ব্যবহার করা কাপড়চোপড় ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং আসবাবপত্র জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করুণ।
মনে রাখবেন, আপনার সচেতনতা এবং পূর্বপ্রস্তুতি শুধু আপনাকে নয়, আপনার আশে-পাশের মানুষ, আত্নীয়-স্বজন, পরিবারবর্গ, সহকর্মী সবাইকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখবে। আমাদের নিরাপদ নির্ভর করে আমাদের সচেতনতা এবং পূর্বপ্রস্তুতি’র উপর।। আসুন, আমরা সবাই সচেতন হই, সবাইকে মহামারী ভাইরাস করোনা থেকে নিরাপদ রাখি।।
ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন।।