রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
মনপুরা :
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ভোলার মনপুরায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের চিন্তা নিবাস স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। রোববার বঙ্গবন্ধু চিন্তানিবাসের স্থান সরজমিনে পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সহকারী পরিচালক মোঃ মাজহারুল ইসলাম। তিনি, মনপুরার হাজীরহাট ইউনিয়নের ভূঁইয়ারহাট সংলগ্ন চিন্তা নিবাসের স্থানটি পরিদর্শন শেষে যুগান্তরকে জানান, দুই মাস পর অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি নির্দেশনা ও বাস্তবায়ন সভায় রির্পোট পেশ করা হবে। পরে ট্যুরিজম বোর্ডের সহকারী পরিচালক মোঃ মাজহারুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসারে কার্যালয়ে ইউএনও মোঃ শামীম মিঞার সাথে বঙ্গবন্ধু চিন্তা নিবাস স্থাপনের বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এই সময় মনপুরায় বঙ্গবন্ধু চিন্তানিবাস কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবীটি তুলে ধরেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারী বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সাথে অনলাইন সভায় ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান, চার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুর চিন্তানিবাস কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব দেয়। একইসাথে চিন্তানিবাস স্থাপনের বিষয় ট্যুরিজম বোর্ড, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় সহায়তা চাওয়া হয়। পরে এমপি জ্যাকবের নির্দেশে মনপুরা উপজেলা প্রশাসন চিন্তানিবাস কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রাথমিক প্রস্তাবপত্র (ধারনা পত্র) তৈরি করে। এরপরই চিন্তা নিবাস কেন্দ্রিক ধারনাপত্রটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি মহান জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তখনকার ছাত্রলীগ নেতা আবদুল লতিফ ভূঁইয়া, একেএম শাহজাহান মিয়া ও আবুল কাশেম মাতাব্বর জানান, ১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর মহাপ্রলয়নকারী ঘূর্ণীঝড় ও বন্যার আঘাতে লন্ড ভন্ড হয়ে যাওয়া মনপুরার অসহায় মানুষের পাশে লঞ্চযোগে ত্রান নিয়ে বন্যার পরবর্তী ১৭ই নভেম্বর এসেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মনপুরার রামনেওয়াজ নদীর ঘাটে খালী গায়ে অভ্যর্থনা জানান মরহুম বসরাত উল্লাহ চৌধুরী। পরে তিনি নিজ হাতে ত্রাণ বিতরন করেন। চর্তুদিকে মেঘনা নদীবেষ্ঠিত সারি সারি কেওড়াবাগান, পাখির কলকাকলিতে মুখরিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অভিরাম দৃশ্য দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। তখন তিনি চিওবিনোদন ও অবকাশকালীন সময় কাটানোর জন্য মনপুরাতে চিন্তানিবাস স্থাপনের পরিকল্পনা করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চিন্তানিবাস স্থাপনের জন্য বঙ্গবন্ধু ইট, বালু, সিমেন্ট, রড পাঠিয়ে ছিলেন। কাজও শুরু হয়েছিল। চিন্তানিবাসের ভিওিপ্রস্থর রামনেওয়াজ বাজার সংলগ্ন বড় দীঘির পাশে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে চিন্তানিবাসের মৃত্যু হয়। এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা যুগান্তরকে জানান, বঙ্গবন্ধুর চিন্তানিবাস স্থাপনের জায়গা নির্ধারনের পর জমির প্রস্তাব দেওয়ার কাজ চলমান। খুব শীঘ্রই বঙ্গবন্ধু চিন্তা নিবাস কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।