কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার বলেছেন, আওয়ামীলীগের মধ্যে বড় নেতারাও আজ অনুভব করছেন দেশে রাজনীতি নেই। রাজনীতিবিদদের হাতে রাজনীতি নেই।এটা অনেকেই বলছেন কিন্তু বাকিটুকু বলছেন না। বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ সমাবেশে তিনি আরো বলেন,গণতন্ত্র নেই বলেই আজ দেশে আইনের শাসন নেই, ন্যায় বিচার নেই, সুশাসন নেই। গণতন্ত্র নেই বলেই আজ বরিশালে বিভিন্ন ধরণের ঘটনা ঘটে। মানুষের ওপর প্রেসার পরছে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মতো, অলিখিত সেই বাকশালকে তারা চালানোর চেষ্টা করছে। যারজন্য বরিশালের মানুষ আজ অতিষ্ট। আজ বরিশালের রাস্তাঘাট, ব্রীজ,
কালভার্টের উন্নয়ন হয় না। বরিশালের যতো উন্নয়ন হয়েছে, তা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কিন্তু তাকে আজ জেলখানায় আটকে রাখা হয়েছে। যে টাকার কথা বলা হচ্ছে সেই টাকা আজ দ্বিগুন হয়ে ব্যাংকে অবস্থান করছে অথচ দেশনেত্রীকে জেলখাটতে হচ্ছে। যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ যখন আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি তখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, তিনি আজ জেলখানায় রয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে অবস্থান করছেন। এটার মানে কি? মানে হলো- দেশে একটা অসম লড়াই চলছে, দেশে একটা বৈষম্য চলছে, দেশে
নিশিরাত্রের ভোট চলছে, দেশে গণতন্ত্র নেই, দেশের মানুষগুলো অধিকারহীনতায় রয়েছে। মানুষের মাঝে আস্থা নেই, মানুষ সংকটে রয়েছে। এরকম পরিস্থিতির মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের, পৌরসভা নির্বাচন হয়, মানুষ ভোট দিতে পারছে না। গ্রামেও তারা নৌকা মার্কা নিয়ে গেছে, যাতে করে তাদের লোকগুলোকে রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত করা যায়। আজ জনগনের ভোটে নির্বাচিত সরকার হচ্ছে না। গণতন্ত্রের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জনগনের ভোটে নির্বাচন। আর ভোট না হলে যোগ্য নেতা কিভাবে নির্বাচিত হবে? ভোট নেই দেখে যোগ্য নেতাও নির্বাচিত হয় না। সরোয়ার বলেন, বর্তমানে দ্রুত ধনীর সংখ্যায় বাংলাদেশ এক নম্বর।আজ আমরা যাদের উন্নয়নের জন্য, কল্যানের জন্য আমরা কথা বলে থাকি তাদের উন্নয়ন নেই। কিন্তু অনেক ধনী আজ গ্রো করেছে, যারা বাংলাদেশের একনম্বর ব্যক্তি এবং তাদের হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। একমাত্র গণতন্ত্রের মাধ্যমে এ দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে।আজ বরিশালে যে ঘটনা ঘটেছিলো, সেটিও বলবো গণতন্ত্র
থাকলে তা হতো না। সরোয়ার বলেন, আমরা জানি একটি বৈষম্যের আকাঙ্খা থেকে বাংলাদেশের সৃষ্টি
হয়েছে। বাংলাদেশের সৃস্টি কোন রাজনৈতিক দর্শনের মাধ্যমে ছিলো না। মুক্তিযুদ্ধকে যে যার ইচ্ছে মতো তার দিকে নিয়ে যেতে চায়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, যার মূল আনুসঙ্গ হচ্ছে গণতন্ত্র কিন্তু সেই গণতন্ত্রকে ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। এসময় তিনি আওয়ামীলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, শ্বাসনতন্ত্রে একটি দর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আপনার এখানে সেটি হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র না থাকলে জবাবদিহীতা থাকে না, আর জবাবদিহীতা না থাকলে দুর্নিতী কমানো যায় না। আজ
যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সেই রাষ্ট্রযন্ত্রের একটা বড় শ্রেনী এখন অবিচার শ্রেনীতে পরিণতো হয়েছে। আজ কানাডায় গেলে দেখা যায়, তাদের বাড়িঘর নাকি সবথেকে বেশি। আজ জনপ্রতিনিধিদের কাছে নয় ক্ষমতা হচ্ছে তাদের কাছে। নগরের সদর রোডে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, সহসভাপতি সৈয়দ হাসান, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আকবর, সহ-সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিন প্রমূখ। এছাড়া একই সময়ে বরিশাল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জেলা দক্ষিন বিএনপির উদ্যোগে পৃথক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা দক্ষিন বিএনপির সভাপতি
এবায়েদুল হক চানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম শাহিনসহ অন্যান্যরা।