রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫৫ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী :
অন্তত আট বছর আগে নিজকাটা গ্রামের আট ভেন্টের স্লুইসগেটটি বেড়িবাঁধসহ দেবে যায়। এরপর থেকে কমবেশি জরুরি মেরামত করে জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা ঠেকাতে বাঁধের ওপর মাটিসহ জিও ব্যাগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানের স্লুইসটির চারটি ভেন্ট অকেজো হয়ে গেছে। এখন ভেন্টের নিচ থেকে সুরঙ্গ হয়ে গেছে। যে কোন সময় সম্পূর্নভাবে ধসে কৃষকের সর্বনাশের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সর্বশেষ এবছর আমফানের সময় জিওব্যাগসহ স্থানীয়রা মাটি দিয়ে জলোচ্ছ্বাস ঠেকা দিয়েছে। শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাল চারটি ভেন্টের গেট খারাপ থাকায় নদীর লোনা পানি খালে প্রবেশ করছে। গেটের সামনে ঝাকি জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন কৃষক সুখরঞ্জন খরাতি। জানালেন, এই স্লুইসটির চুঙ্গা (ভেন্ট) দিয়ে ঠিকমতো পানি নামানো যায় না। সুখরঞ্জনের দেয়া তথ্যে, এই স্লুইসটি ঠিক না করলে নবীপুর, নিজকাটা, চাঁদপাড়া, হোসেনপুর, নাওভাঙ্গা, পাখিমারা গ্রামের হাজারো কৃষকের অপুরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। স্থানীয় অহিদ মাঝি জানান, প্রত্যেক মাসে তিনি লোকজন নিয়ে দেবে যাওয়া গর্তে মাটি দেন। কিন্তু নিচ থেকে পানির সঙ্গে ওই মাটি সওে আবার দেবে যায়। একই দশা কাঠালপাড়ার স্লুইসটির। সব কয়টি ভেন্ট খারাপ। গেট নেই। থাকলেও আটকানো যায় না। এভাবে পক্ষিয়াপাড়া, মেলাপাড়া, পূর্ব-মধুখালী, চরপাড়া, সাফাখালী, লোন্দা, হাফেজ প্যাদা, পাটুয়া, দেবপুর, দশকানি, আনিপাড়া, গাজীর খাল, টিয়াখালী, ইটবাড়িয়া, সদরপুর, গৈয়াতলা, ডালবুগঞ্জসহ শতকরা ৫০ ভাগ স্লুইস কৃষকের কোন কাজে আসে না। এসব স্লুইসগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে তাদের ছত্রছায়ায় একটি প্রভাবশালী মহল মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে কৃষকের সর্বনাশ করে আসছে। এভাবে অন্তত অর্ধশত স্লুইস এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার তথ্যানুসারে কলাপাড়ায় ৪৭ টি ফ্লাসিং (এফএস), ৫৮টি ড্রেনেজ (ডিএস) এবং ২৫ টি রেগুলেটরসহ ১৩০টি স্লুইসগেট রয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, এর মধ্যে ৫২টি স্লুইস খারাপ রয়েছে। যার মধ্যে ৪০টি আংশিক খারাপ, আর ১২টি সম্পুর্ণভাবে অকেজো হয়ে আছে। ইতোমধ্যে বিশ^ব্যাংকের অর্থায়নে ৪৮ নম্বও পোল্ডারের আটটি স্লুইস মেরামতের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।