রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন

বরগুনায় কলেজের নৈশ্য প্রহরীর দায়িত্বে চার প্রভাষক

বরগুনায় কলেজের নৈশ্য প্রহরীর দায়িত্বে চার প্রভাষক

বরগুনায় কলেজের নৈশ্য প্রহরীর দায়িত্বে চার প্রভাষক
বরগুনায় কলেজের নৈশ্য প্রহরীর দায়িত্বে চার প্রভাষক

বেতাগী :

বরগুনার বেতাগীর বিবিচিনি নিয়ামতিযুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের চারজন প্রভাষককে নৈশ্য প্রহরীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় নিয়ে কথা বলায় এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের অধ্যক্ষের প্রতি ঔদ্ধত্যপুর্ন আচরণে শিক্ষক কর্মচারি থেকে শুরু করে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বেতাগীর বিবিচিনি নিয়ামতিযুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ পদে প্রদীপ কুমার বিশ্বাস গত ১৪/০৪/২০১০ খ্রি. তারিখ যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই সীমাহীন দুর্ণীতি ও অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা জনৈক কিশোরী নিজের বাসায় কাজের জন্য গৃহপরিচারিকা হিসেবে নিয়োজিত হয়। এরপর ওই মেয়ের সাথে অনৈতিকভাবে মেলামেশায় এক পর্যায়ে গর্ভপাত ঘটায়। এতে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে দফারফা হয়। অর্থ আত্মসাৎ, কাজের মেয়ের সাথে অবৈধ গর্ভাপাতসহ বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে তাকে প্রায় দু’বছর যাবত চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৫/১২/২০১৪ তারিখ কলেজ পরিচালনা পরিষদ তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তার নিজের অপকর্মের দায় শিকার করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে স্বপদে (অধ্যক্ষ) চাকুরি বহাল রাখার আবেদন জানায়। গত ১২/০৮/২০১৬ খ্রি তারিখ উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সুপারিশের ভিত্তিতে গত ১৪/০৮/২০১৬ খ্রি. পুনরায় অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। যোগদানের ছয় মাসের পরপরই আবার নানা অনিয়ম ও অর্থসাত্মের অভিযোগ ওঠেছে। গত ২২/১২/২০২১ খ্রি. তারিখে জীববিজ্ঞান ল্যাব সহকারী পদে ১ জন, রসায়ন ল্যাব সহকারী পদে ১ জন, কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে ১ জন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ১ জন এবং আয়া পদে ১ জনসহ মোট পাঁচজন কর্মচারি নিয়োগ দেয়া হয়। পাঁচটি পদে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি নিয়োগে ২০ লাখ টাকার অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এসব অনিয়ম নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় কথা বলেন কলেজ শাখার পদার্থ বিজ্ঞানের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বিদ্রোহী আনন্দ নাথ, জীব বিজ্ঞানের প্রভাষক উত্তম কুমার সুতার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের প্রভাষক প্রিন্স দাস এবং গণিত বিষয়ের প্রভাষক হারুন অর রশিদ। এতে অধ্যক্ষ প্রদীপ বুমার বিশ্বাস ক্ষিপ্ত হয়ে এই চারজন শিক্ষককে রাতে কলেজে অবস্থান করার নির্দেশ দেন। প্রভাষক উত্তম কুমার সুতার বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাদের চারজন শিক্ষককে রাতে অবস্থান করার নির্দেশ দেন। এটা কোন যৌক্তিক নিয়ম নেই।’ প্রভাষক বিদ্রোহী আনন্দ নাথ বলেন, আমরা রাতে কলেজে ঘুমাতে বলেন অধ্যক্ষ। না আসলে বেতনভাতা কর্তনের হুমকি দেয়। অথচ কলেজে নৈশ্য প্রহরী পদে হরিপদ দাস চাকুরি করছেন।’ এবিষয় কলেজের শিক্ষার্থীর অভিভাবক নজরুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম দুদকে তদন্ত করে দোষী প্রমানিত হলে তাকে উপযুক্ত শাস্তির বিধান করা হোক। এবিষয় অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছেমাফিক চাকুরি করছেন। শিক্ষকদের অনিয়মে নিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তারা আমার বিপক্ষে অবস্থান নেয়।’ কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. ফরিদ উদ্দিন গাজী বলেন,’ অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস সতর্ক করে দিয়েছি, আমি সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে কোন অনিয়ম প্রমানিত হলে এর দ্বায়ভার তাকে বহন করতে হবে।’

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2012
Design By MrHostBD