রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ১০:০০ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক:
মাস জুড়েই নিত্যপন্যের লাগামহীন দামে অতিষ্ঠ বরিশাল নগরবাসী। খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ার দৌড়ে এখন সবচেয়ে এগিয়ে মাংস। এক মাসে দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। গরু ও মুরগি- উভয়ের মাংসের বাজারে কোন সুখবর নেই। এছাড়া বেড়েছে মাছের দামও । পুর্বের যেমনটা দাম ছিল তার চেয়ে মাছের মুল্য বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্তরা। আমিষের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। ২১০ থেকে ২৩০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি মিলছে না। সোনালি মুরগির দাম ছুঁয়েছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা। এ তো গেলো মুরগির মাংস, অন্যদিকে মুরগির ডিমও এখন বাড়তি। ডিমের ডজন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। পোলট্রি বাজারের এমন পরিস্থিতির জন্য বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করছেন ক্ষুদ্র খামারিরা। যদিও এনিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি তারা। বরিশালের বাজারগুলোতে মাসখানেক আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে যে ব্রয়লার মুরগি কেনা যেতো এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়। কোথাও কোথাও সেটি ২৩০ টাকা। এক কেজি সোনালী মুরগি কিনতে লাগছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা। লেয়ার মুরগির দর উঠেছে ৩০০ টাকা কেজি। এক মুরগি বিক্রেতা জানান, গত সপ্তাহের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। দাম বাড়তি ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির। আশা করছি রোজার আগে দাম কমবে। আর কি কারণে এখন দাম বাড়ছে, সেটি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না খুচরো বিক্রেতারা। কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে ১,১০০ টাকা। আর ১০০ টাকা বেড়ে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। বাজারে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। গরুর মাংসের দাম আরও বাড়ার কথা উল্লেখ করে বিক্রেতারা জানান, গরুর মাংসের দাম আরও বাড়বে। শবে বরাতের আগেই গরুর মাংসের কেজি ৮৫০ টাকা হবে। রোজায় এটি আরও বেড়ে সাড়ে আটশ’ টাকায় গিয়ে ঠেকতে পারে বলেও মনে করছেন তারা। ডিমের বাজারেও কোন স্বস্তি নেই। দেশি মুরগির ডিমের ডজন এখন ২১০ টাকা, বাদামি ডিম ১৩৫। বিক্রেতারা জানালেন, এখন সব বড় খামার নিজেরা ডিম বাজারজাত করছেন। ক্রেতারা জানান, বাজারে বাড়তি দামের কারণে এখন সংসারের অন্য সব খরচের সঙ্গে আপোষ করেই চলতে হচ্ছে। এক ক্রেতা জানান, তিনি শেষবার মুরগি কিনেছেন এক মাস আগে। দাম বাড়তে থাকার কারণে এখন আর কিনতে পারছেন না। ডিম কিনে পকেট সামাল দিচ্ছেন। এদিকে, গরু ও মুরগির মাংসের দাম বাড়ায় এখন নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভিড় করছেন মাছের বাজারে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশালের সহকারী পরিচালক সুমী রানী মিত্র বলেন, ‘আমরা বাজার তদারক করে দেখেছি। আমাদের বাজার তদারকি অভিযান অব্যহত রেেয়ছে। অযথা কেউ মূল্য বৃদ্ধি করবে তা হবে না। ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন হয় এমন কোন ঘটনা ঘটলে প্রমানসহ লিখিত অভিযোগে অবগত করুন বা ১৬১২১ নম্বরে যোগাযোগ করুন। অভিযোগ প্রমানিত হলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এদিকে নিত্যপণ্যের লাগামহীন এই মূল্যবৃদ্ধি কমানোর দাবীতে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। পণ্যের আকস্মিক লাগামহীন মূল্যে অনেক ক্রেতাই দিশেহারা। তারা বলেন সরকারকে অচিরেই দাম সহনীয় করতে উদ্যোগ নিতে হবে এবং বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক করতে হবে। আসছে রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর হবে এমনটাই প্রত্যাশা ক্রেতাদের।