রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন
হঠাৎ উত্তপ্ত বরিশাল-৩: মনোনয়ন বিতর্কের মাঝে আইনজীবীকে ‘টাউট-বাটপার’ বলায় ঝড় — দেশজুড়ে প্রতিবাদ
শফিকুল ইসলাম, বাবুগঞ্জ //
বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ–মুলাদী) আসনে বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দলীয় অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন হঠাৎ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বরিশালের ছয়টি আসনের মধ্যে বরিশাল-৩ আসনের প্রার্থী ঘোষণা স্থগিত থাকায় স্থানীয় রাজনীতিতে বিরাট উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই নারী সমাবেশে আইনজীবী সমাজকে ‘টাউট-বাটপার’ আখ্যা দিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় সমালোচনার ঝড়ে পড়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ।
৫ নভেম্বর বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতেদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির একাংশের আয়োজনে নারী সমাবেশে বক্তব্য দেন ফরহাদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান।
বক্তৃতার এক পর্যায়ে ফরহাদ বলেন—
“ওকালতি যারা করেন তারা টাউট-বাটপার হয়।”
এই বক্তব্য ভিডিও আকারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আইনজীবী সমাজ, স্থানীয় নেতাকর্মী এবং বিএনপির তৃণমূলসহ বিভিন্ন মহলে বিস্তর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বাবুগঞ্জ উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক রকিবুল হাসান খান রাকিব বলেন—
“একজন সাবেক সংসদ সদস্যের মুখে দেশের সম্মানিত পেশাজীবীদের নিয়ে এমন মন্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।”
বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ খান বলেন—
“এই বক্তব্য দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য।”
মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে দেশের বিভিন্ন বার অ্যাসোসিয়েশন, আইনজীবী সংগঠন ও আদালত অঙ্গনে।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল জানিয়েছে—
“আইনজীবীদের পেশাগত সম্মান ক্ষুণ্ন করার মতো বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে—
“দলের পরিচয় যাই হোক, আইনজীবী সম্প্রদায়কে অপমান করলে তা মেনে নেওয়া হবে না। অবিলম্বে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।”
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোর, সিলেট, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা বারে জরুরি সভা করে নিন্দা ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সমালোচনার মুখে নিজের ফেসবুক পোস্টে মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ লিখেছেন—
“ব্যক্তিগত ঘটনার প্রসঙ্গে ভুলবশত ‘অ্যাডভোকেট’ শব্দটি এসেছে। আইনজীবী সমাজকে অপমান করার উদ্দেশ্য ছিল না। কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দুঃখিত।”